দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব ও রাসুল (সা.) এর অনূসৃত আদর্শকে যথাযথভাবে অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের শাহ আলী থানা আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর ডা. মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জিএম হাফিজুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর দৌলত আহমেদ সহ থানার শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য বৃন্দ।
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট থানার উদ্যোগে মাসব্যাপী সীরাত পাঠ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় ৩শ প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করেন। তাদের মধ্য থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারি সহ মোট ১৫ জনের প্রত্যেককেই ক্রেস্ট ও সিরাত গ্রন্থসহ বিভিন্ন ইসলামী গ্রন্থাদি উপহার প্রদান করা হয়।
ড. রেজাউল করিম বলেন, রাসূল (সা.) বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়েছিলেন। পবিত্র কালামে হাকীমের সূরা আল আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি।’ মূলত, আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত পথ ও রাসূল (সা.) অনুসৃত আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণেই সমাজ-রাষ্ট্রে অশান্তি ও অবক্ষয়ের জয়জয়কার চলছে। তিনি বিশ্বনবী (সা.) এর আদর্শ অনুসরণে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন ভূমিকা রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, গোটা বিশে^ই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা এসেছে। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, মানুষের বহিরাভরণ জৌলুসপূর্ণ ও দৃষ্টিনন্দন হলেও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তির প্রত্যাশা বরাবরই অধরায় থেকে গেছে। মূলত, ইসলামী আদর্শের বিচ্যুতিই এই অশান্তি ও অবক্ষয়ের মূল কারণ। রাসূল (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদা অহীর বিধান অনুসরণের মাধ্যমে প্রায় অর্ধেক পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে মুসলিম শাসকদের মধ্যে যারা আল্লাহর নির্দেশিত পথ ও রাসূল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণে শাসনকার্য পরিচালনার চেষ্টা করেছিলেন তারাও সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, প্রগতি, উন্নয়ন, অগ্রগতি সর্বোপরি ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সফল ও সার্থক হয়েছিলেন। মূলত মানব রচিত মতবাদের মাধ্যমে কোন ভাবেই বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই বর্তমান অশান্ত পৃথিবীতে স্থায়ি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে অহীর বিধান অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। তিনি ওহীভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে অদ্বিতীয় ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। কালামে পাকে ঘোষণা করা হয়েছে,‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম’। (সুরা আল ইমরাম-১৯) মূলত আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করার মিশন দিয়েই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কালামে হাকীমের ঘোষণায় আরো বলা হয়েছে, ‘তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব হয়েছে। সুতরাং তোমরা সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অন্যায় কাজে বাধা দেবে আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। ( সুরা আল ইমরান-১১০) তাই বিশ্ব মানবতার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমাদের দাওয়াতি কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে।
মহানগরী সেক্রেটারি বলেন, সরকার দেশের চলমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবে না করে হঠকারিতার আশ্রয় নিচ্ছে। তারা পুলিশ দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলার করার ঘৃণ্য পথ বেছে নিয়েছে। তারা রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করে কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবিকে পাশ কাটাতে চায়। কিন্তু তাদের সে দিবাস্বপ্ন কখনোই সফল হবে না। তিনি টালবাহানা না করে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরাপদ প্রস্থানের সুযোগ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে-ইনশাআল্লাহ!