বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, সংস্কৃতি হলো সেই সামগ্রিকতা- যাতে রয়েছে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার এবং সমাজের একজন সভ্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস। আর প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে। আর আমাদের সংস্কৃতি হয়েছে ওহীর সংস্কৃতি। তাই বিজাতীয় সংস্কৃতির কবল থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চার কোন বিকল্প নেই। তিনি বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন মোকাবেলায় সুস্থধারা সংস্কৃতির অনুসারীদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মহান ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে এক সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরীর নায়েবে আমীর জনাব আব্দুর রহমান মুসা, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন মোল্লা ও মোহাম্মদ আলী। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসন, একশ্রেণির গণমাধ্যমের নেতিবাচক ভূমিকা ও সোস্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারে দেশে অপসংস্কৃতির জয়-জয়কার শুরু হয়েছে। আমাদের নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, তাহজিব-তামাদ্দুন, সমাজ-সংস্কৃতি কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, যৌনতা, পর্ণগ্রাফী, গান-বাজনা, উদ্দাম নৃত্য, মাদকাশক্তির সয়লাব আমাদের সমাজকে ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। দেশে অপরাধ ও অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। বেড়েছে সামাজিক অস্তিরতাও। নতুন প্রজন্ম নিজস্ব সংস্কৃতি বিমুখ হয়ে অপসংস্কৃতির গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে পুরো সমাজ ব্যবস্থাকেই কলুষিত করছে। যা আমাদের জাতি সত্ত্বার পরিচয় ও ভিত্তিমূলকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে আগামী প্রজন্মকে কুরআর-সুন্নাহভিত্তিক সংস্কৃতির অনুশীলন ও চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, মহাগ্রন্থ আল-কুরআন একটি জীবন্ত মু’জেজা। যারাই কুরআনের সংস্পর্শে এসেছেন তারাই এর শ্বাশত আবেদনকে উপেক্ষা করতে পারেননি। বরং ওহীর আলোকে আলোকিত হয়ে ইসলামে সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে।
মহানগরী আমীর একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, একজন খ্রীস্টান কিশোর কুরআনের তিলাওয়াত শুনে অভিভূত হয়ে তার মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এটি কী? প্রত্যুত্তরে তার মা তাকে জানালেন, এটি মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কুরআন। তিনি আবারও জিজ্ঞাসা করলেন, এটিই কি শেষ ? জানানো হলো, না এটি অংশ বিশেষ মাত্র। তারপর তাকে পর্যায়ক্রমে পুরো কুরআন মজীদ এবং ইংরেজী অনুবাদ প্রদান করা হলো। তিনি তা হৃদয়ঙ্গম করে অভিভূত হলেন এবং কালেমা শাহাদাহ পাঠ করে ইসলাম গ্রহণ করলেন। তাই বিশ্বব্যাপী ইসলামী আদর্শ প্রচারের জন্য কুরআন শিক্ষার প্রচার ও প্রসার ঘটাতে হবে। তিনি কুরআনের শিক্ষাকে উচ্চকিত করার জন্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের একযোগে কাজ করার আহবান জানান।