মহান স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হলে শ্রমিকদের নায্য অধিকারের নিশ্চয়তা ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ লক্ষ্মীপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন লক্ষ্মীপুর শহর শাখা আয়োজিত বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদের মাঝে ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের লক্ষ্মীপুর শহর সভাপতি অ্যাড. মঞ্জুর আলম মিরনের সভাপতিত্বে ও লক্ষ্মীপুর শহর সাধারণ সম্পাদক হারুন দেওয়ানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত জেলা সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটোয়ারি, জেলা শাখার উপদেষ্টা মাওলানা নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও শামছুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শহর শাখার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যক্ষ আবুল ফারাহ নিশান, শহর শাখার সাবেক সভাপতি জনাব হারুনুর রশিদ, নাসির উদ্দিন, শহীদুল্লাহ সুমন, শ্রমিক নেতা নওশের আলী, নুর আলম আজাদ ও বাবুল চৌধুরী প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও উদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা সর্বাত্মক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও আমাদের প্রাপ্তি কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছেনি। সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য, ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচার, আইনের শাসনের পরিবর্তে জুলুমবাজী আর গণন্ত্রের পরিবর্তে স্বেচ্ছাতন্ত্র জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এমতাবস্থায় দেশ ও জাতিতে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে হলে দলমত নির্বিবেশে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং বীর শহীদদের স্বপ্নবাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের শ্রমিক সমাজ ঐতিহাসিক ভ‚মিকা পালন করেছে। তারা দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিলেও স্বাধীনতার ৫ দশক পরে এসে তারা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত রয়ে গেছেন। তাই অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে শ্রমজীবী মানুষের যথাযথ মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। এজন্য মালিক-শ্রমিক ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তিনি পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় শ্রমিকদের প্রতি সদয় আচরণ ও তাদের কাজের চাপ কমিয়ে দেয়ার জন্য মালিক পক্ষের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচ্যুতির কারণেই আইনের শাসন প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়নি। সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর আস্থা কথা বলা হলেও রাষ্ট্রাচারের কোন ক্ষেত্রেই সে প্রতিফলন নেই। মূলত, ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধই হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবজ। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্রের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করে জাতিকে এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কথিত উন্নয়নের ঢাকঢোল পিটিয়ে গণমানুষের ভোটের অধিকারকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য শ্রমিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।